ADAB – Association of Development Agencies in Bangladesh

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র নিকট অধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন ধারার এনজিওদের খোলাচিঠি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র নিকট অধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন ধারার এনজিওদের খোলাচিঠি
করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ মানবাধিকার রক্ষা কাজে নিয়োজিত এনজিওদের জন্য বিশেষ প্রনোদনা ঘোষনার আবেদন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
বাংলাদেশে কর্মরত বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিওসমূহের পক্ষ থেকে আন্তরিক শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের জন্য আপনি একজন আত্মপ্রত্যয়ী পথপ্রদর্শক। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে আপনার গৃহীত বিভিন্ন সাহসী পদক্ষেপের কারনেই দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। করোনা মোকাবেলায় বিভিন্ন খাতের জন্য ঘোষিত প্রনোদনাও আগামীদিনে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। পাশাপাশি দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দায়িত্বশীল নাগরিক তৈরীর কাজে নিয়োজিত অধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন ধারার সাথে সম্পৃক্ত এনজিওসমূহের জন্যও একটি বিশেষ প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার জন্য আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন, যে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরই দেশ প্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগেই বেসরকারী উন্নয়র সংস্থাসমূহের যাত্রা শুরু হয়। যারা তাদের মেধা, মনন ও কর্মশক্তি দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্থ বাংলাদেশের পূণর্গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী গড়ে উঠে বিপুল সংখ্যক সামাজিক সংগঠন যা বর্তমানে বেসরকারী উন্নয়ন খাত বা এনজিও খাত নামে সর্বমহলে পরিচিত। তৃণমূল পর্যায়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সচেতনতাবৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নিবিড়ভাবে জড়িত এসব সামাজিক সংগঠন ক্রমান্বয়ে পরিবেশ উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, মানবাধিকার রক্ষাসহ সমাজ উন্নয়নের সকলখাতে এর স্বাক্ষর রাখছে। বর্তমানে এনজিও খাতে সরাসরি কয়েক লক্ষ শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে কর্মরত আছে। এনজিওসমূহের কার্যক্রম এমডিজি অর্জনে যেমন অবদান রেখেছে, তেমনি বর্তমানে এসডিজি বাস্তবায়নেও সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের এনজিওসমূহ মূলত; উন্নয়নের দুটি ধারায় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। একটি ধারায় রয়েছে অধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন ধারার সাথে সম্পৃক্ত এনজিওসমূহ যারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষণ, সচেতনতাবৃদ্ধি ও মানবাধিকার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে অপরদিকে আরেকটি ধারা উপর্যুক্ত কিছুকাজ ছাড়াও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের আওতায় দরিদ্র মানুষকে উদ্যোক্তা হিসাবে তৈরী করে। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে এ দুই ধারার এনজিওরাই তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মহীন মানুষদের জরুরী খাদ্য সরবরাহে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। তবে কোভিড-১৯ প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করা এনজিওসমুহের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ সৃষ্টি হলেও মানবসম্পদ উন্নয়ন ও মানবাধিকার রক্ষার কাজে সম্পৃক্ত এনজিওদের অংশগ্রহণের সুযোগ একেবারে নেই বললেই চলে। একদিকে বিশ্বব্যাপী করোনা’র প্রভাবে বিদেশী সহায়তা কমে যাওয়া, অন্যদিকে সরকার ঘোষিত প্রণোদনায় এসব এনজিও;র অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় করোনা মোকাবেলাসহ দেশের সার্বিক বিকাশে মানবিক উন্নয়নে অভিজ্ঞ এ খাতটি’র অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে পড়বে। তাই মানব উন্নয়ন ও মানবাধিকার রক্ষা খাতে জড়িত এনজিওদের কার্যক্রম গতিশীল রাখার জন্য সদাশয় সরকারের সদয় বিবেচনা কামনা করছি।
জয়ন্ত অধিকারী,
চেয়ারপারসন, এডাব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top